International

শিরোনাম: কোরিয়ান জনপ্রিয় নাটক ‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’-এ মিথিলা: বাংলা ডাবিংয়ে নতুন অধ্যায়

শিরোনাম: কোরিয়ান জনপ্রিয় নাটক ‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’-এ মিথিলা: বাংলা ডাবিংয়ে নতুন অধ্যায়

oplus_34

 

বাংলা সংস্কৃতির জনপ্রিয় মুখ, অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, এবার যুক্ত হলেন কোরিয়ান বিনোদন দুনিয়ার এক বিখ্যাত নাটক ‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’ বা সংক্ষেপে ডটস-এর সঙ্গে। তবে অভিনয় নয়, এই প্রজেক্টে মিথিলা ভূমিকা রাখছেন ভিন্নধর্মী একটি ক্ষেত্রে। নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের জন্য তিনি বাংলায় ডাবিংয়ের মাধ্যমে কণ্ঠ প্রদান করবেন।

 

ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান: এক নজরে

 

‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’ ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি কোরিয়ান নাটক। এটি কোরিয়া ও বিশ্বব্যাপী বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সিরিজটির মূল কাহিনি আবর্তিত হয়েছে একজন সেনা অফিসার এবং একজন ডাক্তারকে ঘিরে, যারা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশে মানবতার সেবায় নিয়োজিত থাকাকালীন প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। নাটকটির গল্প, অভিনয় এবং আবেগঘন মুহূর্ত দর্শকদের মনে এক বিশাল জায়গা করে নেয়।

 

এই নাটকটি কেবল কোরিয়াতেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চীন, ভারতসহ আরও অনেক দেশে এর জনপ্রিয়তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশেও কোরিয়ান ড্রামা বা কেড্রামার ভক্তসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।

 

বাংলা ডাবিং: ভাষার বাঁধা ভাঙার প্রয়াস

 

বাংলাদেশে কেড্রামার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার ফলে এ দেশের দর্শকদের কাছে নাটকগুলো আরও সহজবোধ্য ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য বাংলা ডাবিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ডাবিংয়ের মাধ্যমে ভাষার বাধা দূর করে নাটকের মূল আবেদনকে স্থানীয় দর্শকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব।

 

‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’-এর বাংলা ডাবিংয়ের প্রজেক্টটি সেই প্রচেষ্টারই একটি অংশ। এর মাধ্যমে কেড্রামার গল্প এবং চরিত্রগুলো বাংলাদেশের দর্শকদের আরও কাছাকাছি আসবে। নাটকটির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে দক্ষ কণ্ঠশিল্পীদের, যাঁরা তাদের সৃজনশীলতা ও কণ্ঠের জাদু দিয়ে মূল চরিত্রগুলোকে বাংলা ভাষায় জীবন্ত করে তুলবেন।

 

মিথিলার নতুন ভূমিকা

 

অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বাংলা বিনোদন অঙ্গনে একজন সুপরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত নাম। টেলিভিশন নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপন এবং গানের ভিডিওতে তাঁর অভিনয় দক্ষতা বরাবরই প্রশংসিত হয়েছে। তবে ডাবিং জগতে এটি তাঁর প্রথম কাজ।

 

ডাবিং নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে মিথিলা বলেন,

 

> “এটি আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে ক্যামেরার সামনে কাজ করতে অভ্যস্ত হলেও শুধু কণ্ঠ দিয়ে চরিত্র ফুটিয়ে তোলা একটি ভিন্নধর্মী চ্যালেঞ্জ। ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান-এর মতো একটি বিশ্ববিখ্যাত নাটকের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। আশা করছি, বাংলাভাষী দর্শকরা এটি উপভোগ করবেন।”

 

 

 

মিথিলা এমন একজন চরিত্রে কণ্ঠ দিচ্ছেন, যা কাহিনির মূল প্রবাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কণ্ঠের আবেগ, উচ্চারণ এবং অভিনয়ের অভিজ্ঞতা বাংলা ডাবিংয়ে বিশেষ মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

বাংলাদেশে কেড্রামার উত্থান

 

কেড্রামা বা কোরিয়ান ড্রামার প্রতি বাংলাদেশের দর্শকদের আগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে গত কয়েক বছরে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই নাটকগুলোর চাহিদা বেড়ে গেছে। কোরিয়ান সংস্কৃতি, গল্প বলার ধরণ, এবং তাদের বিশেষ কিছু সামাজিক বার্তা দর্শকদের আকৃষ্ট করছে।

 

বাংলাদেশে কেড্রামার জনপ্রিয়তার পেছনে ইউটিউব এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ভূমিকা অনেক। সহজলভ্য অনুবাদ এবং সাবটাইটেলের মাধ্যমে দর্শকরা নাটকগুলো দেখতে পারলেও বাংলা ডাবিংয়ের অভিজ্ঞতা আলাদা। এটি কেবল নাটকের সাথে সহজ সংযোগ গড়তে সাহায্য করে না, বরং এর মাধ্যমে কাহিনির আবেগ ও ভাবনার গভীরতাও দর্শকের মনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

 

ডাবিং শিল্পে মিথিলার সম্ভাবনা

 

মিথিলার মতো একজন বহুমুখী প্রতিভাধর শিল্পী ডাবিং শিল্পে কাজ করার ফলে বাংলা ভাষার নাট্যাঙ্গনে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। শুধু অভিনেত্রী হিসেবেই নয়, মিথিলা একজন গায়িকা এবং শিক্ষাবিদ হিসেবেও পরিচিত। তাঁর কণ্ঠস্বরের স্বরলিপি এবং আবেগপ্রবণতা ডাবিংয়ের জন্য উপযুক্ত।

 

ডাবিং শিল্পে মিথিলার এই যাত্রা প্রমাণ করে যে সৃজনশীলতা কোনো একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়াবে অন্য শিল্পীদের জন্যও, যারা অভিনয়ের বাইরেও নিজেদের প্রতিভা প্রমাণ করার সুযোগ খুঁজছেন।

 

বাংলা ডাবিংয়ের ভবিষ্যৎ

 

বাংলাদেশে বাংলা ডাবিং সংস্কৃতির বিকাশ আরও নতুন নতুন নাটক ও সিনেমাকে স্থানীয় দর্শকদের সামনে তুলে ধরবে। এটি কেবল দর্শকদের বিনোদনের পরিধি বাড়াবে না, বরং স্থানীয় শিল্পীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান এবং সৃজনশীল ক্ষেত্র তৈরি করবে।

 

‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’-এর মতো একটি জনপ্রিয় নাটকের বাংলা ডাবিংয়ের মাধ্যমে যে অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা আরও অনেক আন্তর্জাতিক প্রজেক্টকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। এই উদ্যোগটি স্থানীয় ভাষায় বিদেশি কনটেন্ট উপস্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরে এবং বাংলাদেশের কেড্রামা ভক্তদের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার খুলে দেয়।

 

উপসংহার

 

রাফিয়াত রশিদ মিথিলার বাংলা ডাবিং জগতে প্রবেশ একটি সাহসী এবং প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তাঁর কণ্ঠে ‘ডেসেন্ড্যান্টস অফ দ্য সান’-এর চরিত্র নতুন রূপ পাবে, যা বাংলা দর্শকদের জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা হবে।

 

বাংলা ডাবিংয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নাটকগুলোকে স্থানীয় দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এই প্রয়াস সময়ের দাবি। এটি কেবল বিনোদন নয়, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময়েরও একটি মাধ্যম। আশা করা যায়, মিথিলার মতো আরও শিল্পীরা এই যাত্রায় সামিল হয়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা আরও উঁচুতে তুলে ধরবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button